সিরাজগঞ্জের কাজিপুর থানার চত্বরে বিষমুক্ত সবজি চাষ করে তাক লাগিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। পুলিশী দায়িত্ব পালনের পর অবসর সময়ে দুই বিঘা জমিতে হরেক রকমের সবজি চাষ করছেন তারা। সেই সবজির পরিচর্যাও করছেন পুলিশ সদস্যরা। তারা বলছেন, উৎপাদিত বিষমুক্ত সবজি বিক্রি না করে নিজেরাই মেসে ও বাড়ীতে নিয়ে রান্না করে নিজেদের পুষ্টির চাহিদা মেটাচ্ছেন।
কাজিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শ্যামল কুমার জানান, থানা ক্যাম্পাসে প্রায় দুই বিঘা জমি পরিত্যক্ত ছিল। পরিত্যক্ত জায়গাটি প্রায় ৫ ফুট গভীর ছিল। সবসময় ময়লা আবর্জনাযুক্ত পানি থাকায় সাপ-বিচ্ছুর আনাগোনা থাকত। সবসময় পুলিশ সদস্যরা সাপ-বিচ্ছুর আতঙ্কে থাকতো। এ অবস্থায় পুলিশ সদস্যের সাথে আলোচনা করে নিজেদের উদ্যোগে মাটি ভরাট করা হয়। এরপর সবাই সম্মিলিত চেষ্টায় সবজি বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। এতে একদিকে যেমন থানার সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে অন্যদিকে থানার পুলিশ সদস্যদের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারছে।
পুলিশ সদস্য সিরাজুল ইসলাম জানান, মাটি ভরাটের পর কোন বাইরের লোক দিয়ে নয় বরং আমরাই পরিকল্পণা মাফিক বাগান গড়ে তোলার কাজ শুরু করি। অক্লান্ত পরিশ্রম করে সৌন্দর্য্যমন্ডিত একটি বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। বর্তমানে বাগানটিতে লাউয়ের মাচায় শোভা পাচ্ছে কচি কচি লাউ। এছাড়াও বাগানটিতে আরও রয়েছে কাঁচামরিচ, পেয়াজ, রসুন, বেগুন, ফুলকপি, পাতাকপি, টমেটো, শিম, পেঁপে, লালশাক, পুঁইশাক, ডাটাশাক, বাঙ্গি ও চিচিঙ্গাসহ ১৭ রকমের সবজি।
কাজিপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক আবু জাফর জানান, রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের পর অবসর সময়ে পুলিশ সদস্যরা যে যখন সময় পাচ্ছে তখনই সবজি ক্ষেতের পরিচর্যা করছেন। কেউ আগাছা পরিষ্কার করছের আবার কেউ দিচ্ছেন পানি। নিয়মিত পরিচর্যার ফলে সবজির ফলন ভাল হয়েছে।
পুলিশ সদস্য রেজয়ানুল ইসলাম জানান, বাগানটিতে শুধু জৈব সার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যে কারণে এ বাগানের সব সবজিই পুরোপুরি বিষমুক্ত।
পুলিশ সদস্য জান্নাতুল ফেরদৌসী জানান, বাগানের উৎপাদিত সবজিগুলো বাইরে বিক্রি হয় না। যে সমস্ত পুলিশ সদস্যরা মেসে থাকেন তারা রান্না করে খাচ্ছেন। আর যে সমস্ত অফিসাররা বাসায় থাকছেন তারা বাড়ীতে নিয়ে গিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে খাচ্ছেন। এতে যেমন অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে তেমনি শারীরিক অবস্থাও ভাল থাকছেন। অন্যদিকে, থানা ক্যাম্পাসে পুলিশ সদস্যদের সবজি বাগান দেখে অনেকেই সবজি বাগান করতে আগ্রহী হচ্ছেন বলে জানান পুলিশ সদস্যরা।